মাদার বোর্ড ও তার বিভিন্ন অংশ

সি পি ইউ (CPU) বা মূল কার্যকারী অংশের মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হলো মাদারবোর্ড। মাদারবোর্ড কম্পিউটাররে অপর গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রগুলি, যেমন RAM, প্রসেসর, বিভিন্ন কার্ড বিভিন্ন ড্রাইভ ইত্যাদি সংযুক্ত থাকে।

যন্ত্রগুলি কিভাবে থাকে তা মাদারবোর্ডে ডেমো চিত্রের সাহায্যে দেখানো হলো......


মাদারবোর্ড এর অভ্যন্তরীণ যন্ত্র গুলো আলোচনা করা যাক……

প্রসেসর : কম্পিউটারের ব্রেইন বলতে যদি কিছু থাকে তবে তা হল প্রসেসর। একে সি পি ইউ বা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বলা হয়। প্রসেসর গঠিত হয় অসংখ্য রেজিস্টার নিয়ে। রেজিস্টার গুলি, কতগুলি ফ্লিপ-ফ্লপ ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস। যেগুলি 0 ভোল্ট বা 15 ভোল্ট এই দুই ধরনের ভোল্টেজ লেভেল স্টোর করে এগুলি দ্বারা 0 এবং 1 এই দু'ধরনের বাইনারি সংখ্যাকে বোঝায়। রেজিস্টার গুলি সাধারণত 16, 32, বিট হয়ে থাকে।16 bit ফ্লিপ-ফ্লপ এর মধ্যে 16 বাইনারি নাম্বার এর গুচ্ছ এবং 32 bit ফ্লিপ-ফ্লপ এর মধ্যে 32 বাইনারি নাম্বার এর গুচ্ছ সঞ্চয় করে রাখে। এই ভাবে '0' এবং '1' দ্বারা তৈরি অসংখ্য ইন্সট্রাকশন দিয়ে তৈরি করে কোড। এই কোডের মাধ্যমেই কম্পিউটার ব্যবহারকারীর ভাষা বা নির্দেশ প্রসেসর বুঝতে পারে এবং ব্যবহারকারীর চাহিদামতো আউটপুট দেয়। 

ম্যাথ কো প্রসেসর : (Math Co-Processor): ম্যাথ কো প্রসেসর টি প্রসেসর এর  সহযোগী হিসেবে কাজ করে। কম্পিউটার প্রসেসর স্পিড বাড়াতে সাহায্য করে সাধারণত ম্যাথ কো প্রসেসর মাদারবোর্ড লাগানো থাকে না। কম্পিউটার ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুসারে এটি লাগানো হয়।  তবে বিশেষ কিছু সফটওয়্যার ম্যাথ ছাড়া চলে না। আলাদা করে ম্যাথ কো প্রসেসর লাগাতে হয়।  8088, 80286, 80386, মাদারবোর্ড প্রসেসর লাগানোর জন্যআলাদা করে একটি সকেট থাকে। আবার 80486 হায়ার প্রসেসর এর ম্যাথ কো-প্রসেসর ইনবিল্ট থাকে।সেক্ষেত্রে এতে আলাদা করে ম্যাথ কো প্রসেসর লাগাতে হয় না।  

র‌্যাম (RAM) : RAM বা র‌্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমোরি হল একটি প্রাইমারি মেমোরি যা টেম্পোরারি হিসাবে কাজ করে। সাধারণভাবে মাদারবোর্ড RAM গুলি ব্ল্যাংক আকারে থাকে। এই ব্ল্যাংক মেমরি সাধারণত ডায়নামিক র‌্যাম বা এস

আই এম এম (SIMM ) যোগান হয়। তবে কোন কোন মাদারবোর্ড মেমোরি ব্যাংক এর পরিবর্তে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা হয়।

রম (ROM) : ROM বা Read-Only Memory  হল আরেকটি প্রাইমারি মেমোরি যা মূলত স্থায়ী বা পার্মানেন্ট স্টোরেজ ইউনিট। এটি দু ধরনের হয়ে থাকে যেমন ROM BIOS  এবং ROM BASIC , তবে বর্তমানে ROM BASIC ব্যবহার করা হয় না।ROM BASIC মধ্যে বেশ কিছু নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন কম্পিউটার তৈরীর সময় দিয়ে দেওয়া হয় যা পরবর্তীকালে কম্পিউটার চালু করার সঙ্গে সঙ্গে স্কিনে দেখায়। আবার বায়োসের নির্দেশ-গুলি বিভিন্ন ইনপুট আউটপুট ডিভাইস গুলো ঠিক মতো কাজ করছে কিনা তা পোস্ট POST(Power on self test) পাওয়ার অন সেল পেস্টের মাধ্যমে চেক করে .রুম এর মধ্যকার নির্দেশগুলি সাধারণত মোছা বা ইরেজ।

করা যায় না। কনভেনশন মেমোরি (Conventional Memory) : কম্পিউটার ব্যবহৃত মেমোরি প্রথম 640kb মেমোরি কে বলা হয় কনভারসেশন মেমোরি। একে আবার বেস মেমোরিও বলা হয়।

ভিআইপি সুইচ (DIP Switch) : শুধুমাত্র XT কম্পিউটারের আইপি সুইচ দেখা যায়।এক্স টি কম্পিউটারে সাধারণত কোন সেটআপ  ইউটিলিটি থাকে না, তাই  8 টি অন অফ সুইচ বিশিষ্ট ডিপিআই সুইচ (DIP Switch) দ্বারা এই ধরনের কম্পিউটার কনফিগারেশন ঠিক করা হয়।

রিচার্জেবল ব্যাটারি ( Rechargeable Battery ): কম্পিউটার যখন অফ থাকে তখন এই ধরনের ব্যাটারির সাহায্যে বায়স (BIOS ) সাল তারিখ সময় পরিবর্তন পরে। এই ব্যাটারি কম্পিউটার অফ থাকাকালীন সময়ে CMOS (Complementary metal oxide semiconductor) Ram chip পাওয়ার সরবরাহ করে উক্ত তথ্যগুলি পরিচালনায় পরিবর্তন করে। দ্বিতীয় তৃতীয় প্রজন্মের মাদারবোর্ডে ইন ব্যাটারি ব্যবহৃত হতো এগুলি থেকে 3.6 V ,  60Ah  বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো।  কিন্তু বর্তমানে চতুর্থ পঞ্চম প্রজন্মের মাদারবোর্ডে আলাদা একটি ব্যাটারি কেস এর মধ্যে এই ধরনের ব্যাটারি লাগানো থাকে। ফলে তা সহজেই পরিবর্তন করা সম্ভব হয়। এই ধরনের ব্যাটারিগুলি লিথিয়াম ব্যাটারি এবং এগুলি থেকে 3 ভোল্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়. কম্পিউটার অন অবস্থায় এই ধরনের ব্যাটারি চার্জ হয়, এবং অফ অবস্থায় তা CMOS RAM  বিদ্যুৎ সরবরাহ করে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পরিবর্তনের সহায়তা করে।

এক্সপানশন স্লট বা  আই / স্লট (Expansion Slot or I/O slot) : মাদারবোর্ড যে যন্ত্রাংশের মাধ্যমে অপরাপর অ্যাড ইন কার্ড (Add-in Card গুলিকে সংযুক্ত করা হয় তাকে বলা হয় এক্সপেনশন স্লট। এই স্লট গুলি 6টি ,7টি  , 8টি  হতে পারে।  আবার এগুলি বিভিন্ন বিটের (bit) হতে পারে যেমন 8 bit ,16 bit  বা 32 bit. একটি অংশ নিয়ে গঠিত  স্লট  গুলি সাধারণত 8 bit , দুটি অংশ নিয়ে গঠিত স্লট  গুলি 16 bit হয়। বিভিন্ন অ্যাড ইন কার্ড  যেমন ভিডিও কার্ড হার্ডডিক্স  ইত্যাদি লাগানোর সময়  তাই দেখে নিতে হয় কোনটি কত বিটের। অর্থাৎ  যেটি 16 বিটের সেটিকে 16 bit eএর  স্লট  আবার 8 bit  এর কার্ড সেটিকে 8 bit  এর স্লট বসাতে হবে।

কিবোর্ড কানেক্টর (Keyboard Connector):  কি বোর্ডকে মাদারবোর্ড এর সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য এই যন্ত্রটি ব্যবহার হয়। কিবোর্ড কানেক্টরটি সাধারণত স্থায়ী হয়। Serial (DIN) এবং PS/2 (Mini DIN) প্রধানত এই দুই ধরনের কিবোর্ড কানেক্টর লক্ষ্য করা যায়।

পি এস টু মাউথ কানেক্টর(PS/2 Mouse Connector ) : সাধারণত পেন্টিয়াম কম্পিউটারে একটি 7 pin এর ফিমেল কানেক্টর। পোর্ট দ্বারা PS/2 মাউসকে মাদারবোর্ড এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। সাধারণত যে সিগন্যাল আদান-প্রদান হয় তা হল
প্যারালাল পোর্ট (Parallel Port) : পেন্টিয়াম বা আরো উন্নত ধরনের মাদারবোর্ডে যে প্যারালাল  পোর্ট থাকে তা LPT1 নামে পরিচিত। এটি একটি 25  pin এর ফিমেল কানেক্টর পোর্ট।প্যারালাল পোর্ট সাধারণত প্রিন্টার যুক্ত করা হয়। যে পিন গুলি সাহায্যে সিগনাল আদান-প্রদান হয় তা হল …..

সিরিয়াল পোর্ট Serial Port : সাধারণত COM1 এবং COM2 এই দুই ধরনের সিরিয়াল পোর্ট 9 Pin এর মেল কানেক্টর পোর্ট, পেন্টিয়াম বা তার পরবর্তী মাদারবোর্ডে যুক্ত থাকে। সিরিয়াল পোর্টের সাধারণত মাউস এবং মডেম যুক্ত করা হয়। যে 9 পিনের সাহায্য সিনেমা গান হয় তা হল

ইউ এস বি পোর্ট USB Port : ইউএসবি পোর্ট সাধারণত স্ক্যানার, ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদি যুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে বর্তমানে কিবোর্ড মাউস  সবই ইউএসবি ব্যবহার করা হয়।  পেন্টিয়াম বা তার পরবর্তী মাদারবোর্ড  4 পিন ইউএসবি পোর্ট যুক্ত থাকে।

পাওয়ার কানেক্টর Power Connector : পাওয়ার সাপ্লাই থেকে মাদারবোর্ডের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাওয়ার কানেক্টর থেকে সরবরাহ করা হয়। XT ( Extended Technology) এবং AT(advanced Technology) মাদারবোর্ডে 12 পিন বিশিষ্ট পাওয়ার কানেক্টর থাকে। 

Post a Comment

Previous Post Next Post